আজ ২২শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৫ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

সংগৃহীত ছবি

মৃত্যুর ২৭ বছর পরও সালমান শাহ আজও জনপ্রিয়


অনলাইন ডেস্কঃ মোটের ওপর তিন বছর সিনেমায় কাজ করেছিলেন তিনি। অথচ প্রায় ত্রিশ বছর ধরে তাকে নিয়ে সমান চর্চা, আলোচনা। মৃত্যুর পরও যে এত দীর্ঘ সময় জনপ্রিয়, দর্শকের আগ্রহ-আলোচনাজুড়ে থাকা যায়, সেটার অনন্য উদাহরণ তিনি, সালমান শাহ। আজ বুধবার (৬ সেপ্টেম্বর) তার চলে যাওয়ার দিন। ১৯৯৬ সালের এই দিনে রহস্যমৃত্যুকে আলিঙ্গন করে তিনি পাড়ি জমিয়েছেন না ফেরার দেশে।

অকালমৃত্যু শব্দটা তার ক্ষেত্রেই অধিক মানায়। মাত্র তিন বছরে ঢাকাই সিনেমাকে বিস্মিত করেছিলেন, জনপ্রিয়তার নতুন মাপকাঠিতে পরিণত হয়েছিলেন সালমান শাহ। সেই ‘স্বপ্নের নায়ক’কে এমন সহসা হারিয়ে ফেলে নিঃসন্দেহে স্তব্ধ হয়ে পড়েছিল ইন্ডাস্ট্রি। তাই সালমান শাহ যেন ঢালিউডপ্রেমীদের জন্য আক্ষেপেরও নাম।

চলে গিয়েও যাদের মাধ্যমে এখনও ‘জীবন্ত’ সালমান শাহ, সেই ভক্তদের অনেকেই প্রতি বছরের মতো এবারও তার স্মরণে দোয়া করবেন। ‘টিম সালমান শাহ’ নামের গ্রুপের পক্ষ থেকে দোয়া ও মিলাদের আয়োজন করেছেন মাসুদ রানা নকীব নামের এক ভক্ত। বুধবার (৬ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর মোহাম্মদপুরস্থ শহীদ পার্ক কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে বাদ আসর এই দোয়া অনুষ্ঠিত হবে।

সালমান শাহ ভক্তদের মিলাদে শামিল হওয়ার আহ্বান জানিয়ে মাসুদ রানা নকীব বলেন, ‘প্রিয় নায়কের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী থেকে পরবর্তী প্রত্যেক ৬ সেপ্টেম্বর চাঁদপুরের একটি এতিমখানায় মিলাদ ও দোয়ার আয়োজন হয়ে আসছে শুধু আমার ব্যক্তিগত উদ্যোগে। এরপর ২০০২ সালে আমি ঢাকা চলে আসার পর ঢাকাতেও প্রতি বছর দোয়া-মিলাদের আয়োজনের চেষ্টা জারি রেখেছি। প্রিয় মানুষের প্রতি ভালোবাসা, শ্রদ্ধা থেকেই এসব করেছি, করছি এবং ভবিষ্যতেও চেষ্টা করবো।’

১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর ঢাকার ইস্কাটনের বাসায় সালমান শাহর রহস্যমৃত্যু ঘটে। সেই রহস্যের জট এখনও খোলেনি। দফায় দফায় তদন্ত, প্রতিবেদন দাখিল হয়েছে। কিন্তু তাতে সন্তুষ্ট হতে পারেনি নায়কের পরিবার কিংবা ভক্তরা। কারণ সেসব প্রতিবেদনে বরাবরই বলা হয়েছে, সালমান শাহ আত্মহত্যা করেছেন।

সালমান শাহর জন্ম ১৯৭১ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর, সিলেটের দড়িয়াপাড়ায়। তার পারিবারিক নাম শাহরিয়ার চৌধুরী ইমন। সিনেমার জন্যই তিনি সালমান শাহ নামটি ধারণ করেছিলেন।

সুদর্শন চেহারা আর মনে অভিনয়ের স্বপ্ন নিয়ে শোবিজে আসেন সালমান শাহ। শুরুটা হয় ১৯৮৫ সালে বিটিভির নাটক ‘আকাশ ছোঁয়া’ দিয়ে। এরপর বেশ কয়েকটি খণ্ড ও ধারাবাহিক নাটকে তাকে দেখা গেছে।

সিনেমায় সালমান শাহর আত্মপ্রকাশ ১৯৯৩ সালে, সোহানুর রহমান সোহান পরিচালিত ‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’ দিয়ে। এটি ১৯৮৮ সালের হিন্দি সিনেমা ‘কায়ামাত সে কায়ামাত তাক’র অফিসিয়াল রিমেক। প্রথম ছবিতেই সাফল্য পান সালমান শাহ, রাতারাতি হয়ে ওঠেন তারকা। একের পর এক সিনেমা আসে তার ঝুলিতে।

পরবর্তী তিন বছর চুটিয়ে কাজ করেছেন সালমান শাহ; নির্দিষ্ট করে বললে ২৭টি সিনেমায় অভিনয় করেছিলেন। এর অধিকাংশই হয়েছিল সফল। এর মূলে ছিল তার নজরকাড়া ফ্যাশন, সুদর্শন চেহারা আর দক্ষ অভিনয়। ফলে নতুন প্রজন্মের অনেক নায়কই তাকে আদর্শ মেনে অনুসরণ-অনুকরণ করেন।

সালমান শাহ অভিনীত উল্লেখযোগ্য কয়েকটি সিনেমা হলো, ‘তুমি আমার’, ‘স্বপ্নের পৃথিবী’, ‘বিচার হবে’, ‘স্বপ্নের ঠিকানা’, ‘সুজন সখি’, ‘স্বপ্নের নায়ক’, ‘চাওয়া থেকে পাওয়া’, ‘আনন্দ অশ্রু’, ‘বুকের ভেতর আগুন’ ইত্যাদি।

প্রতিবেদন: বাংলাট্রিবিউন


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     এই বিভাগের আরও খবর